বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইতিহাসে যুক্ত হলো আরেকটি গর্বের অধ্যায়। মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে এশিয়া কাপ বাছাই পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ আগেই মূল পর্ব নিশ্চিত করেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে শেষ ম্যাচটি কেবল আনুষ্ঠানিকতা মনে করেনি পিটার বাটলারের শিষ্যরা। বরং তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৭-০ গোলের বড় জয়ে বাছাই পর্বের দুর্দান্ত সমাপ্তি টেনেছে দল।
ইয়াঙ্গুন স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৩য় মিনিটে স্বপ্না রানীর গোলে এগিয়ে যায় দল। এরপর ৬ ও ১৩ মিনিটে শামসুন্নাহারের জোড়া গোলে আরও দৃঢ় হয় লাল-সবুজের দাপট। ১৬ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মনিকা, ঋতুপর্ণা ও তহুরা খাতুন টানা তিন গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৬-০। প্রথমার্ধ শেষের আগ মুহূর্তে ঋতুপর্ণা নিজের দ্বিতীয় গোলটি করলে ৭-০ ব্যবধানে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল না পেলেও ম্যাচজুড়ে বল দখল এবং আক্রমণে আধিপত্য ধরে রেখেছিল টাইগ্রেসরা। শেষ মুহূর্তে কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় ডাবল ডিজিট স্কোরের সুযোগ হাতছাড়া হয়।
পুরো বাছাই পর্বে তিন ম্যাচে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ১৬ বার, বিপরীতে গোল খেয়েছে মাত্র একবার, সেটিও মিয়ানমারের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে উড়িয়ে দেয় ৭-০ ব্যবধানে, দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারায়। সবশেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
দুইবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী দল এবারই প্রথম এশিয়ার বড় মঞ্চে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানালো। এশিয়া কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেশের নারীদের সাফল্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে তারা।
বাফুফে সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল দেশে ফিরবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল। মধ্যরাতে ঢাকায় পৌঁছানোর পর নারী দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
বাংলাদেশের এই জয় শুধু পরিসংখ্যান নয়, নারী ফুটবলে আত্মবিশ্বাসেরও এক শক্ত ভিত্তি তৈরি করলো। এশিয়া কাপের মূল পর্বে এই আত্মবিশ্বাসই হতে পারে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি, যা দেশের কোটি ফুটবলপ্রেমীর স্বপ্ন পূরণের প্রতীক হয়ে উঠেছে।