সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে কর্মরত প্রবাসী নার্সদের জন্য অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুম প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞ নার্সদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্সি ভিসা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘকাল ধরে দুবাইয়ের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত নার্সরা দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের সুযোগ পাবেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সে সকল নার্স এই সুবিধা পাবেন যারা অন্তত ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে দুবাইয়ের হেলথ সিস্টেমে সেবিকা হিসেবে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে ভিসার জন্য কোনো প্রকার নাগরিকত্বের ভিন্নতা বিবেচনা করা হবে না।
দেশটির সরকার এই পদক্ষেপকে নার্সদের মানবিক সেবা ও স্বাস্থ্যখাতে তাদের অপরিহার্য ভূমিকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন হিসেবে দেখছে। দীর্ঘ সময় ধরে যারা অক্লান্তভাবে সেবা দিয়ে আসছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এবং তাদের পেশাগত জীবনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে শেখ হামদান তার নির্দেশনায় বলেন, ‘নার্সদের ত্যাগ ও নিষ্ঠার স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদের এই মানবিক ভূমিকা দুবাইয়ের স্বাস্থ্যখাতকে আরও দৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে।’
এই গোল্ডেন রেসিডেন্সি ভিসার আওতায় নার্সরা ৫ অথবা ১০ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি পাবেন, যা পরবর্তীতে নবায়ন করা যাবে। এই ভিসার জন্য স্থানীয় কোনো স্পন্সরের প্রয়োজন হবে না। এছাড়াও, নার্সরা তাদের স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের স্পন্সর করার সুযোগ পাবেন। এমনকি ভিসা থাকাকালীন ছয় মাসের বেশি সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাইরে অবস্থান করলেও তাদের ভিসার বৈধতা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্তাবলী নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: দুবাই হেলথ সিস্টেমে ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কাজ করা, স্বীকৃত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকা, দুবাই হেলথ অথরিটি (ডিএইচএ), আবুধাবি ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ (ডিওএইচ), অথবা সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় (এমওএইচ) অনুমোদিত পেশাগত লাইসেন্স থাকা, সামনে থেকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা গুরুত্বপূর্ণ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা হাসপাতালের পক্ষ থেকে ব্যতিক্রমী সেবার জন্য মনোনয়ন লাভ।
এই বিশেষ ভিসাধারীরা বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করবেন। যার মধ্যে রয়েছে ৫ বা ১০ বছরের জন্য নবায়নযোগ্য রেসিডেন্সি, স্পন্সরের বাধ্যবাধকতা না থাকা, পরিবারসহ বসবাসের সুযোগ, ভিসা বহাল থাকা অবস্থায় ছয় মাসের বেশি দেশের বাইরে থাকার অনুমতি এবং বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসুবিধা গ্রহণের সুযোগ।
আরব আমিরাত সরকারের এই পদক্ষেপ প্রবাসী নার্সদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ধারণা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীদের মধ্যে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বাস্থ্যখাত আরও শক্তিশালী ও উন্নত হবে।