সময়ের জনমাধ্যম

তারেক-জোবায়দা’র বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আমাদের সরকারের আমলে এ মামলা হয়নি৷ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলা হয়েছে।

আমাদের সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মোটেও কোনও কিছু করেনি। বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের শাস্তির প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে মামলায় তারেক রহমানের নয় বছর ও জোবাইদা রহমানের তিন বছরের সাজা হয়েছে। এ মামলা কিন্তু আমাদের সরকার দায়ের করেনি। এ মামলা করেছে ২০০৭ সালে তাদের পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কারণ ইয়াজ উদ্দিন সাহেব বেগম খালেদা জিয়ার দলের মানুষ ছিলেন এবং তাকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া বা বিএনপি। ফখরুদ্দিন সাহেব ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে ছিলেন। সেখান থেকে ধরে এনে তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানানো হয়। সে সরকার সেনা সমর্থিত এবং সেনাবাহিনী প্রধান যিনি ছিলেন তাকে সাতজনকে ডিঙ্গিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান বানিয়েছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক ও জোবায়দা রহমান

তিনি বলেন, তাদের পছন্দের মানুষরা যখন ক্ষমতায় তখন এ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে। আমাদের সরকার যদি প্রতিহিংসা পরায়ণ হতো তাহলে আমরাই মামলা করতাম। আর মামলা রায় হওয়ার জন্য ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না। অনেক আগেই মামলার রায় হতো। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে নানা কথা বলা হচ্ছে। আসলে আইন আদালত কোনও কিছুর ওপর তাদের (বিএনপি) আস্থা নেই এবং কোনও কিছুকে তোয়াক্কা করে না। শুধু ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে যায়। আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না বরং বিদেশিরা আমাদের কাছে আসে।

সম্প্রতি তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার নিয়ে আদালত একটি রায় দিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রায় আগেও ছিল। তারেক রহমানের কোনও বক্তব্য পত্র পত্রিকায় বা টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। মেইনস্ট্রিমের কোনও পত্রিকা বা মিডিয়া তারেক রহমানের কোনও বক্তব্য প্রচার করে না। কিন্তু মাঝে মধ্যে কেউ কেউ ভুল করে করে। সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব চ্যানেলে হয়। আমি মনে করি এগুলো হচ্ছে বিধায় আদালত আবার সাপ্লিমেন্টারি রায় দিয়েছে। কেউ যদি এর ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে আদালত অবমাননা হবে৷ আদালত অবমাননা হলে আদালত সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে৷

বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এ রায় দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত এ মামলা সরকার করেনি। আমাদের সরকারের আমলে এ মামলা হয়নি৷ এ মামলা হয়েছে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। আর সরকার যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু করতো তাহলে এ মামলার রায় হওয়ার জন্য ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না। নির্বাচনতো এর আগেও দুইটি হয়েছে আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন৷ এটির সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই এবং আমাদের সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মোটেও কোনও কিছু করেনি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচারের রায় হয়েছে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছি এবং আলাপ আলোচনা চলমান রয়েছে।