মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানবহর ‘এয়ার ফোর্স ওয়ানে’ যুক্ত হতে পারে অত্যাধুনিক এক বিলাসবহুল জেট বিমান। সোমবার (১২ মে) বিবিসি জানিয়েছে, এই বিমানটি নিয়ে আলোচনা চলছে খোদ হোয়াইট হাউস এবং কাতারের রাজপরিবারের মধ্যে।
কাতার সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, ‘বিমানটি উপহার হিসেবে দেওয়া হবে না, বরং এটি সাময়িক ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
সিবিএস নিউজের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বর্তমান মেয়াদ শেষে এই বিমানটি তার প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে দান করা হতে পারে। উল্লেখ্য, এই সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফরে কাতার যাচ্ছেন।
কাতারের যুক্তরাষ্ট্রস্থ মিডিয়া অ্যাটাচি আলি আল-আনসারি এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি উভয় দেশের আইনি বিভাগ পর্যালোচনা করছে এবং এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সিবিএস নিউজের খবর অনুযায়ী, বিমানটি অবিলম্বে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। এর জন্য “পুনর্গঠন এবং নিরাপত্তা পর্যালোচনার প্রয়োজন হবে।”
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘কোনো বিদেশি সরকারের দেওয়া উপহার সর্বদা প্রযোজ্য সকল আইন মেনে গ্রহণ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে পোস্টে এই বিমানটিকে “একটি উপহার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “প্রতিরক্ষা দপ্তর একটি ৭৪৭ বিমান উপহার হিসেবে পাচ্ছে, যা পুরোনো এয়ার ফোর্স ওয়ানকে সাময়িকভাবে প্রতিস্থাপন করবে।”
বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান বহরে ১৯৯০ ও ১৯৯১ সাল থেকে ব্যবহৃত দুটি বোয়িং ৭৪৭-২০০বি বিমান রয়েছে। কাতারের প্রস্তাবিত বিমানটি বোয়িং ৭৪৭-৮ মডেলের, যা আন্তর্জাতিক মহলে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’ নামে পরিচিত।
বোয়িং কোম্পানি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুটি নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান সরবরাহের চুক্তি করেছে। তবে, ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি নির্ধারিত সময়ে বিমান সরবরাহ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে কাতারের সাথে এই বিকল্প আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কাতারের সাথে ইতিবাচক কূটনৈতিক সম্পর্ক দেখা গেছে, যার মধ্যে ২০১৯ সালে কাতারের পক্ষ থেকে বড় আকারের মার্কিন বিমান কেনার ঘোষণা ছিল। এছাড়াও, কাতার এর আগেও বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল বিমান উপহার দিয়েছে, যার মধ্যে ২০১৮ সালে তুরস্ককে দেওয়া একটি বিমান উল্লেখযোগ্য।