কানাডায় আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে এখনো আমন্ত্রণ পায়নি ভারত। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা। বিশ্বের সাতটি শীর্ষ শিল্পোন্নত দেশের এই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর বাইরে প্রতিবছর কিছু দেশকেও আমন্ত্রণ করা হয়।
আগের বছরগুলোতে ভারতও ছিল সেসব আমন্ত্রিত দেশের তালিকায়। মনমোহন সিং থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদির আমলেও ভারত একাধিকবার অংশ নিয়েছে এই সম্মেলনে। মোদির ডাক না পড়লেও এবারও আমন্ত্রিত হয়েছেন ইউক্রেন, সাউথ আফ্রিকা, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং অস্ট্রেলিয়ার সরকার প্রধানরা।
কিন্তু ভারত না থাকায় সরব ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলছেন, “জি-৭ এ আমন্ত্রণ না পাওয়া ভারতের আন্তর্জাতিক মর্যাদার জন্য ধাক্কা। এটা বর্তমান সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির প্রতিচ্ছবি।” রমেশ বলেন, ২০০৭ সালে জার্মানিতে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে “সিং-মার্কেল ফর্মুলা” ছিল ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রমাণ। গত ৬ বছরে এই প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী অনুপস্থিত জি-৭ সম্মেলনে। কংগ্রেসের ভাষায়, এটি ‘বিশ্বগুরুর কূটনৈতিক ব্যর্থতা’।
ভারতের ডাক না পাওয়াার পর অনেক প্রশ্ন উঠছে। এটি কি কেবল রাজনৈতিক? না কি এর পেছনে রয়েছে অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক টানাপোড়েন? ২০২৩ সালে খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ আনেন কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক নামতে থাকে তলানীতে। সেই টানাপোড়েনেরই ফলই কি এবারের সম্মেলনে তালিকা থেকে ছিটকে দিল ভারতকে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, জি-৭-এ অনুপস্থিত থাকা একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের সক্রিয় অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, অন্যদিকে মোদির ব্যক্তিগত কূটনৈতিক ভাবমূর্তিও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে প্রতিটি উপস্থিতি, প্রতিটি আমন্ত্রণ কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে, সেখানে এই অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। জি-৭ সম্মেলনে ভারতের আমন্ত্রণ না পাওয়া কি কেবল একবারের কূটনৈতিক ত্রুটি? নাকি এটি ভারতের প্রতি বৃহত্তর পররাষ্ট্র বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের ইঙ্গিত?