সম্প্রতি চীনের কৃষি ও গ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক ধরনের প্রোটিনকে নতুন পশুখাদ্য হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। তবে প্রোটিনের প্রচলিত উৎস—প্রাণী বা উদ্ভিদ থেকে এই খাবার তৈরি হবে না। বায়োইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে উৎপন্ন হবে এই প্রোটিন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, এই ‘নতুন যুগের সূচনা’ পশুখাদ্যের সঙ্কট মোকাবিলা এবং সবুজায়ন বাড়াতে ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। গেল বৃহস্পতিবার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডেইলি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বেইজিং-ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান জিটিএলবি ‘ইয়ারোইয়া লিপোলাইটিকা ইস্ট প্রোটিন’ নামের এই পশুখাদ্য উৎপাদন করেছে।
প্রোটিনটি বায়ো-ফারমেন্টেশন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপন্ন হয়। এই প্রযুক্তি কয়লাভিত্তিক রসায়ন, প্রাকৃতিক গ্যাস রসায়ন ও ইস্পাত উৎপাদন শিল্প থেকে নিঃসৃত কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে। পরে তা উচ্চ পুষ্টি গুণসম্পন্ন ‘ইস্ট’ প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়। বলা হয়, প্রচলিত কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন পদ্ধতির তুলনায় এই প্রযুক্তি পশুখাদ্য প্রোটিন উৎপাদনের ক্ষমতা হাজার গুণ পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম।
যেমন, মাত্র ১০ হেক্টর জমির একটি ইস্ট প্রোটিন কারখানা প্রতি বছর এক লাখ টন উচ্চমানের ইস্ট প্রোটিন উৎপাদন করতে পারে। এটি প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদিত সয়া প্রোটিনের সমতুল্য।
পুষ্টিগুণের দিক থেকে ইস্ট প্রোটিনে উচ্চমাত্রায় প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড আছে। এর বণ্টন অত্যন্ত সুষম ও খাওয়ার উপযোগী। এ ছাড়া, এতে ট্রেস এলিমেন্ট ও পলিস্যাকারাইডের মতো উপকারী উপাদানও রয়েছে।
নতুন এই প্রযুক্তি আরও টেকসই ও সম্পদ-সাশ্রয়ী পশুখাদ্য প্রোটিন সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারে। এটি জমি নির্ভর ফসল, যেমন: সয়া ও সামুদ্রিক সম্পদ, যেমন: ফিশমিলের ওপরও নির্ভরতা কমিয়ে আনবে।
চীন বর্তমানে প্রোটিনযুক্ত পশুখাদ্যের সংকটে ভুগছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালে চীনে মোট প্রোটিনসমৃদ্ধ পশুখাদ্যের ব্যবহার ছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন টন। এর ৮০ শতাংশের বেশি আমদানি করা হয়।