চীনের আপত্তি উপেক্ষা করে দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত ও ফিলিপাইনের যৌথ নৌমহড়া


দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের আপত্তি ও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার মধ্যেই প্রথমবারের মতো যৌথ নৌমহড়া চালিয়েছে ফিলিপাইন ও ভারত। এই মহড়ার খবর সোমবার (৪ আগস্ট) নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ফিলিপাইনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই মহড়াটি শুরু হয় রবিবার (৩আগস্ট)। দেশটির সেনাপ্রধান রোমেরো ব্রনার জানান, মার্চ মাসে ভারতীয় সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পরই এই মহড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
রোমেরো ব্রনার সরাসরি চীনের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘মহড়ার সময় আমরা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হইনি। তবে আমরা যেমনটা ধারণা করেছিলাম, কেউ একজন পুরো সময় আমাদের ওপর নজর রাখছিল।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জলসীমা নিয়ে যে কোনো বিরোধের নিষ্পত্তির জন্য কেবল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যেই আলোচনা হওয়া উচিত এবং অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।
এই যৌথ মহড়ায় ভারতের পক্ষ থেকে অংশ নেয় গাইডেড মিসাইল ধ্বংসকারী জাহাজ ‘আইএনএস দিল্লি’, ট্যাংকার ‘আইএনএস শক্তি’ এবং করভেট ‘আইএনএস কিল্টান’। ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে যোগ দেয় দুটি ফ্রিগেট – ‘বিআরপি মিগুয়েল মালভার’ ও ‘বিআরপি হোসে রিজাল’।
এই মহড়ার সময়ই ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস পাঁচ দিনের সফরে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার সফরের প্রধান লক্ষ্য হলো সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং প্রতিরক্ষা, ওষুধ ও কৃষিখাতে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।
দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ, যার মধ্য দিয়ে বছরে প্রায় তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এই জলসীমার ওপর চীনের আধিপত্যের দাবি নিয়ে ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের মতো উপকূলীয় দেশগুলোর সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।
২০২৩ সাল থেকে ম্যানিলা বিদেশি নৌবাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত মহড়া আয়োজন করে আসছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স এবং কানাডার নৌবাহিনী এই ধরনের যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের ২০১৬ সালের এক রায়ে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবিকে অযৌক্তিক ঘোষণা করা হলেও চীন সেই রায় প্রত্যাখ্যান করে।