‘ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়’: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী


জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সংগঠনকে না জানিয়ে কক্সবাজার সফর করায় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন। বুধবার বিকেলে দেওয়া ওই শোকজ নোটিশে দাবি করা হয়, সফর সম্পর্কে ‘রাজনৈতিক পর্ষদ’কে কোনো পূর্ব তথ্য বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্ধারিত সময়ের আগেই নিজের ফেসবুক পেজে একটি বিস্তারিত লিখিত ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি জানান, দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের মাধ্যমে এই ব্যাখ্যা দলের দুই শীর্ষ নেতার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
লিখিত ব্যাখ্যায় নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘৫ আগস্ট আমার কোনো রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। দল থেকেও আমাকে এ বিষয়ে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।’ তিনি জানান, ৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তাকে জানান যে তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে দুই দিনের জন্য ঘুরতে যাচ্ছেন এবং বিষয়টি আহ্বায়ককে জানানো হবে। তিনি নিজেও দলীয় কার্যালয়ে আহ্বায়কের সঙ্গে দেখা করে ও সদস্যসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলে বিষয়টি জানান।
নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমি কোনো দায়িত্বে না থাকায় ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কক্সবাজারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সফরসঙ্গী হিসেবে সস্ত্রীক সারজিস আলম এবং তাসনিম জারা–খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি যুক্ত হন।’
তিনি জানান, ‘আমি কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম ঠিকই, তবে সেই ঘোরার লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তা করা। সাগরের পাড়ে বসে ভাবতে চেয়েছি গণ–অভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ ও নতুন সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে। এটি অপরাধ নয়, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা।’
সফরের সময় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমি গণমাধ্যমকে তাৎক্ষণিকভাবে জানাই এটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হোটেল কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে সেখানে পিটার হাস ছিলেন না। পরে জানা যায় তিনি তখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন। এই গুজবটি আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’
‘শোকজ নোটিশটি বাস্তবভিত্তিক নয়,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমার সফর স্বচ্ছ, সাংগঠনিক নীতিমালার পরিপন্থী নয় এবং এটি ছিল ব্যক্তিগত চিন্তা ও মানসিক প্রস্তুতির একটি পর্যায় মাত্র। তবুও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে আমি লিখিত জবাব দিয়েছি।’
শেষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘ঘুরতে যাওয়া কোনো অপরাধ নয়। কারণ ইতিহাস কেবল মিটিংরুমে নয়, অনেক সময় নির্জন সাগরের পাড়েও জন্ম নেয়।’