গোয়েন্দা নজরদারিতে কক্সবাজার সফরে যাওয়া এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতা


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে হঠাৎ করেই কক্সবাজার সফরে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পাঁচ শীর্ষ নেতা। সফরের সময়, বিলাসবহুল রিসোর্টে অবস্থান, হোটেল পরিবর্তন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে রাজনৈতিক মহল, প্রশাসনে ও জনসাধারণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম কৌতূহল ও জল্পনা।
গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৪৩৩ ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছান এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।
তারা ভিআইপি সুবিধা না নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মতো বের হয়ে সরাসরি চলে যান ইনানীর বিলাসবহুল সী পার্ল রিসোর্টে (রয়েল টিউলিপ)। এরপর বুধবার দুপুরে হঠাৎ রিসোর্ট ত্যাগ করে কলাতলীর একটি রেস্টুরেন্টে মধ্যাহ্নভোজ শেষে তারা প্রাসাদ প্যারাডাইস হোটেলে স্থানান্তরিত হন।
সফরের পুরোটা সময় এনএসআই ও ডিজিএফআইসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাদের চলাচলের ওপর কড়া নজরদারি চালান। উঠেছে গোপন বৈঠকের গুঞ্জনও। এমনকি একটি মহল থেকে দাবি করা হয়, সফরে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠকের পরিকল্পনা ছিল।
তবে রয়েল টিউলিপ হোটেলের নিরাপত্তা প্রধান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘হোটেলে কোনো বিদেশি ছিলেন না, কেউ বৈঠকও করেননি। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করেছেন।’
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত কোনো গোপন বৈঠকের দৃশ্যমান প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে নজরদারি অব্যাহত আছে।
হঠাৎ এই সফরের ব্যাখ্যা না থাকায় দলীয় অবস্থান থেকেও চাপের মুখে পড়েন নেতারা। এনসিপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে তাদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা বিএনপিসহ স্থানীয় রাজনৈতিক মহলেও এনসিপির এই সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন ও গুঞ্জন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাসাদ প্যারাডাইসে অবস্থানরত নেতাদের ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সফরের দুই দিন পরও পরিষ্কার নয়, এ সফরের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল। তবে পর্যটন শহর কক্সবাজারে এমন তৎপরতা রাজনৈতিক অঙ্গনে একরকম অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।