ভারতের গুজরাটে একটি স্কুলের স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে ছাত্রীদের বোরকা পরিয়ে ‘সন্ত্রাসী’ চরিত্রে দেখানো নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ১৫ আগস্ট আয়োজিত ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা একটি নাটক মঞ্চস্থ করে। সেখানে কয়েকজন ছাত্রী কালো বোরকা ও খেলনা বন্দুক হাতে ‘সন্ত্রাসী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তারা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের দিকে গুলি চালানোর ভঙ্গিমা প্রদর্শন করেন।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার উল্লেখ দেখা গেছে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে দেশাত্মবোধক গান বাজতে শোনা যায়।
ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। স্থানীয় নেতা জহুরভাই জেজা বলেন, ‘মেয়েদের বোরকা পরিয়ে সন্ত্রাসী সাজানো হয়েছে। এর মাধ্যমে মুসলমানদের অপমানিত ও হেয় করা হয়েছে। নিষ্পাপ শিশুদের ব্যবহার করে সমাজে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং স্কুলের প্রিন্সিপালসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে বরখাস্তের দাবি জানাই।’
বিতর্কের পর স্কুলের প্রিন্সিপাল রাজেন্দ্র কুমার দাভে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বালিকা বিদ্যালয়। প্রতি বছর আমরা স্বাধীনতা দিবসে নাটক মঞ্চস্থ করি। এবার ‘অপারেশন সিঁদুর’ বিষয়ক নাটক উপস্থাপন করা হয়েছিল। বাচ্চাদের পোশাকে যদি কোনো ভুল থেকে থাকে এবং তা কোনো সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত লেগে থাকে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই কারও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করা ছিল না।’
প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির শিক্ষা কর্মকর্তা মুঞ্জল বডমিয়া জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবসে সব স্কুলেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।