সময়ের জনমাধ্যম

গাজীপুরে পোশাক কারখানার মেকানিককে হত্যার অভিযোগে একজন গ্রেফতার

গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার ইলেকট্রিক মেকানিক হৃদয়কে (১৯) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তারকৃত হাসান মাহমুদ মিঠুন (২৮) টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার হাদিরা বাজার এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তাকে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অজ্ঞাত আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।

পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার আনুমানিক রাত ৮টা থেকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করায় বিষয়টি দেরিতে প্রকাশ পায়। স্থানীয়রা জানায়, ‎হত্যাকাণ্ডের পর কর্তৃপক্ষ গার্মেন্টসের মূল ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ সাঁটিয়ে দেয়।

পুলিশ জানায়, নিহত হৃদয় স্থানীয় গ্রিনল্যান্ড ফ্যাক্টরিতে ডাইং সেকশনের ইলেকট্রিক মেকানিক হিসেবে অস্থায়ীভাবে কাজ করতেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলার শুকতারবাইদ এলাকার আবুল কালামের ছেলে। গাজীপুর কোনাবাড়ীর হারিনাবাড়ী এলাকায় মা ও বোনসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন হৃদয়।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকালে চুরির অপবাদ দিয়ে গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টসের নিরাপত্তা কর্মীরা হৃদয়ের হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তারা। দুপুরের দিকে হৃদয় মারা যায়। ঘটনার খবর আশপাশের অন্যান্য গার্মেন্টসে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে প্রায় ৫০০ শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসে এবং গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টস কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা হৃদয় হত্যার বিচার দাবিতে কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান, ‘প্রথমে আমাদের কাছে খবর আসে চোর কারখানার দেয়াল টপকে ভেতরে আসার সময় ড্রেনে পড়ে আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর আমরা কারখানায় অভিযান চালিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ এবং হত্যায় ব্যবহৃত অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হই এটি হত্যাকাণ্ড।’

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত শনিবার ভোরে কয়েকজন লোক হৃদয়কে দড়ি দিয়ে হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে কারখানার ভেতরে একটি কক্ষে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তার ওপর নির্মম নির্যাতন করা হয়। শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে কারখানার ভেতরে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেখা যায়। অ্যাম্বুলেন্সটিকে হৃদয়কে নিয়ে ১০টা ২১ মিনিটে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে গ্রিনল্যান্ড কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।