এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছেনা


এশিয়া কাপ ২০২৫-এ ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার নির্ধারিত হাইভোল্টেজ ম্যাচ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রীড়া ও কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে সৃষ্ট উত্তেজনার পর এই ম্যাচটি খেলা হবে কি না, তা নিয়ে সবার চোখ এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারান। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করলে দুই দেশ সংঘর্ষে জড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশ সংঘর্ষ থেকে সরে আসলেও বিরাজ করছে কূটনৈতিক বৈরিতা। এর রেশ ধরে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় সম্পর্কেও বড় ধরনের অবনতি ঘটেছে। এরই মধ্যে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এশিয়া কাপের সূচি ঘোষণা করেছে, যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার দিন ধার্য করা হয় ১৪ সেপ্টেম্বর।
ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে বিসিসিআইর ওপর সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছে। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক কর্মকর্তা জানান, ‘জাতীয় ক্রীড়া গভর্ন্যান্স বিল এখনো পাস হয়নি, তাই বিসিসিআই সরকারের অধীনে পড়ে না। তবে আমরা বিসিসিআই কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখছি। জনমতও বিবেচনায় নেওয়া হবে।’
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তা আনুষ্ঠানিক ‘ওয়াকওভার’ হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে পাকিস্তানকে বিনা খেলায় পয়েন্ট দিয়ে দেওয়া হবে, যা সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের জন্য স্পষ্টতই প্রতিকূল হবে।
এই মাসের শুরুতেই বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস-এর দ্বিতীয় মৌসুমে যুবরাজ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়নস দল পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তীব্র জনরোষের মুখে আয়োজকরা ম্যাচটি বাতিল করতে বাধ্য হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে।
ভারত ও পাকিস্তান যদি গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায়, তাহলে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দুবার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন, ভারত আদৌ এই ম্যাচ খেলবে কি না?
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, কূটনৈতিক সংকট, জাতীয় আবেগ এবং ক্রীড়ানীতির দ্বন্দ্বে দাঁড়িয়ে বিসিসিআই যে সিদ্ধান্তই নিক, তা শুধু ক্রিকেটীয় ফলাফলেই নয়, বরং উপমহাদেশের সামগ্রিক কূটনৈতিক ও ক্রীড়া-সম্পর্কের গতিপথেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিসিসিআইর এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেও ব্যাপক কৌতূহল বিরাজ করছে।