ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির বলেছেন, যদি চুক্তির মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হয়, তাহলে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চলতেই থাকবে। এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন আন্তর্জাতিক চাপ এবং জিম্মিদের পরিবারের বিক্ষোভ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার গাজার এক কমান্ড সেন্টারে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে জামির বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা জানতে পারব, কোনও চুক্তির মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব কি না। যদি তা না হয়, তাহলে যুদ্ধ বিরতিহীনভাবে চলবে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল হামাস, যাদের মধ্যে এখনও ৪৯ জন গাজায় বন্দি রয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন মারা গেছেন। সম্প্রতি হামাস বন্দি জিম্মিদের দুর্বল শারীরিক অবস্থার ভিডিও প্রকাশ করলে জিম্মিদের পরিবারের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ আরও বাড়ে। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যেন আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা হয়।
যদিও জামির এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি নৈতিক বাহিনী এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক। তিনি আরও বলেন, গাজার সাধারণ মানুষের এই দুর্দশার জন্য হামাসই দায়ী।
গত বছরের ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এর প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০ হাজার ৩৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। এছাড়াও, ইসরায়েলের স্থল হামলায় তাদের ৮৯৮ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলা আলোচনা গত মাসে ভেস্তে যাওয়ার পর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সামরিক পদক্ষেপের চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামিরের সর্বশেষ হুঁশিয়ারি সেই চাপের বহিঃপ্রকাশ।