ইরানের পরমাণু কর্মসূচি রুখতে ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ সক্রিয় করার হুমকি


ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান অচলাবস্থায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইউরোপের তিন শক্তি; ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি। আগামী আগস্টের শেষ নাগাদ যদি তেহরান কূটনৈতিক সমাধানে না আসে, তাহলে তারা ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। এই তিন দেশ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও নিরাপত্তা পরিষদের কাছে পাঠানো এক যৌথ চিঠিতে এই কঠোর বার্তা দিয়েছে।
এই তিন দেশ, যারা ই৩ নামে পরিচিত, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে তারা সব ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে। তবে যদি তেহরান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সমঝোতায় না আসে, তাহলে তারা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অংশ হিসেবে থাকা ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ প্রয়োগ করবে। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী, চুক্তির কোনো সদস্য চাইলে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের পুরোনো নিষেধাজ্ঞাগুলো ফিরিয়ে আনতে পারে।
ফ্রান্সের জ্যাঁ-নোয়েল বারো, ব্রিটেনের ডেভিড ল্যামি এবং জার্মানির ইয়োহান ভাডেফুলের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘আগস্ট ২০২৫-এর শেষের আগে ইরান যদি কূটনৈতিক সমাধানে রাজি না হয়, অথবা মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ কাজে না লাগায়, তাহলে আমরা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম চালু করতে প্রস্তুত।’
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি জটিল হয়। ইউরোপের দেশগুলো যদিও চুক্তিতে ছিল, তাদের সাম্প্রতিক চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে ইরান চুক্তির শর্ত ভেঙে অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘ই৩ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সৃষ্ট সংকটের কূটনৈতিক সমাধানে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে আগস্টের শেষ নাগাদ সন্তোষজনক সমাধান না এলে আমরা চুক্তি লঙ্ঘনের আনুষ্ঠানিক নোটিশ দিয়ে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করব।’
তবে ইরানের পাল্টা অভিযোগ, ইউরোপীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার কোনো আইনি অধিকার নেই।