ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিমান হামলা করেছে ইসরায়েল। এতে নিহত হয়েছে ছয়জন। হামলায় আহত হয়েছে ৮৬ জন। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। রোববার হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে বড় আকারে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি হামলার পর দেশটির রাজধানীর আকাশে একটি বড় 'অগ্নিগোলক' দেখা যায়। এতে পুরো আকাশ প্রজ্বলিত হয়ে উঠে। এরপর ঘন ও কালো ধোঁয়ায় রাজধানীর বড় একটি অংশ ঢেকে যায়।
হুতি পরিচালিত সংবাদ এজেন্সি সাবা জানিয়েছে, নিহতের ও আহতের সংখ্যা বেড়ে যথাক্রমে ছয় ও ৮৬ হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি আরও জানায়, আহতদের ২০ জন অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হুতিদের একজন নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে বলেছেন, ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ছিল সানার কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ভবন।
হুতি টিভি চ্যানেল আল-মাসিরাহ জানায়, একটি তেল অবকাঠামো ও সানা'র দক্ষিণে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রও হামলা করেছে ইসরায়েল। অবকাঠামো দুটি গত রোববারও (১৭ আগস্ট) আক্রান্ত হয়েছিল।
ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের কাছে একটি সামরিক কমপাউন্ড, দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি তেলের ডিপোতে হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেছে, 'ইসরায়েল রাষ্ট্র ও দেশটির বেসামরিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন হুতির ধারাবাহিক আগ্রাসনের জবাবে হামলা করা হয়েছে।'
গত শুক্রবার দিনের শেষভাগে হুতিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। দেশটির দাবি, হুতিদের মিসাইল খুব সম্ভবত "মধ্য আকাশে ছিন্নবিচ্ছিন্ন" হয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াইনেট জানায়, হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ক্লাস্টার ওয়ারহেড ছিল। তাদের ভাষ্য মতে, এবারই প্রথম ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে হুতিরা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ ও সামরিক বাহিনীর প্রধান ইয়াল জামির একটি কমান্ড বাঙ্কারে বসে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে হামলা পর্যবেক্ষণ করছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, বিমানবাহিনী 'রাজধানী সানা'র কেন্দ্রে অবস্থিত প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, শহরের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহকারী তেলের ট্যাংকে হামলা চালিয়েছে।'
'ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের দায়ে সন্ত্রাসী হুতি গোষ্ঠীকে অনেক বড় মূল্য চুকাতে হবে—এবং ইতোমধ্যে তারা তা চুকাচ্ছে', বলেন নেতানিয়াহু।
হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, 'আমরা ইসরায়েল ও তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে পিঠটান দেব না। যতদিন পর্যন্ত না গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও অবরোধ বন্ধ না হচ্ছে, ততদিন আমরা লড়ে যাব।'
এদিকে, রোববার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি হামলার প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।