ইয়েমেনের রাজধানী সানার নিকটে বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। রবিবার (১৭ আগস্ট) ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে বড় ধরনের বিস্ফোরণ হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হামলার ফলে হেজইয়াজ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেখানে আগুন ধরে যায়। পরে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। হুথি সংশ্লিষ্ট আল মাসিরাহ টিভি একে সরাসরি ‘আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেছে।
ইয়েমেনের উপ-প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চিত করেছেন, জরুরি কর্মীরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অন্তত দুটি তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ওই স্থাপনাটি হুথিরা ব্যবহার করছিল। তবে এটি একটি বেসামরিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ায় এমন হামলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রমাণ হাজির করতে না পারায় এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, এই হামলা ছিল হুথির ধারাবাহিক আক্রমণের জবাব, যার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলাও অন্তর্ভুক্ত। ২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় হুথি নিয়মিত রকেট ও ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে। এর পাল্টা জবাবে ইসরায়েল ইয়েমেনের অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে মানবিক সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হোদেইদা বন্দরও রয়েছে।
অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা গেলেও এসব আক্রমণ ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধকে আঞ্চলিকভাবে বিস্তৃত করেছে। হুথিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজে আক্রমণ করায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে। এতে বৈশ্বিক বাণিজ্য বিঘ্নিত হয়।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করেই হুথির সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। এই চুক্তির পর মার্কিন বিমান হামলা বন্ধ হয় এবং হুথিরাও মার্কিন জাহাজে আক্রমণ স্থগিত করে। তবে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতা তাদের ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রমে প্রযোজ্য নয়।
চুক্তির আগে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে শত শত বিমান হামলা চালিয়ে আড়াই শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। সে সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, এ সমঝোতা ‘বোমাবর্ষণ বন্ধ করবে।’ তবে ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকে হতবাক করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, প্রয়োজনে ইসরায়েল একাই নিজেদের রক্ষা করবে।