সময়ের জনমাধ্যম

আইপিএলে মুস্তাফিজ, ছয় কোটির পুরোটা পাবেন না

দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে আবারও আইপিএলে দেখা যাবে বাংলাদেশের বাঁহাতি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানকে। চলতি আসরের বাকি অংশের জন্য তাকে দলে নিয়েছে দিল্লি। আইপিএলের বিজ্ঞপ্তিতে তার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ছয় কোটি রুপি।

এই অঙ্ক শুনে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে অনেকেই কৌতূহলি হয়েছেন। কারণ, আইপিএলের লিগ পর্বে দিল্লির বাকি রয়েছে মাত্র তিনটি ম্যাচ। প্লে-অফে উঠতে পারলে হয়তো আরও এক-দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে দলটি। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে, মোস্তাফিজ কি এই অল্প কয়েকটি ম্যাচের জন্য পুরো ছয় কোটি রুপি পারিশ্রমিক পাবেন?

এর সহজ উত্তর হলো—না, পুরো অর্থ তিনি পাবেন না। আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো খেলোয়াড় যদি মৌসুমের মাঝপথে ‘বদলি’ হিসেবে দলে যোগ দেন, তবে তার পারিশ্রমিক নির্ধারিত হয় ‘প্রো-রাটা’ ভিত্তিতে। এর অর্থ হলো, পুরো মৌসুমের মোট ম্যাচ সংখ্যার ভিত্তিতে খেলোয়াড়ের মূল পারিশ্রমিককে ভাগ করা হয় এবং খেলোয়াড় যতগুলো ম্যাচ দলের সাথে থাকবেন, সেই অনুপাতে তাকে অর্থ প্রদান করা হবে। খেলোয়াড় মাঠে খেলুক বা না খেলুক, দলের সাথে যুক্ত থাকলেই সেই অংশের পারিশ্রমিক তার প্রাপ্য।

দিল্লির হয়ে খেলতে যাওয়া মুস্তাফিজ মূলত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের বদলি হিসেবে দলে এসেছেন। যদিও ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক চোটে পড়েননি বা অসুস্থও নন, তবে ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আইপিএল সাময়িকভাবে স্থগিত হলে তিনি অন্যান্য বিদেশি খেলোয়াড়দের মতো নিজ দেশে ফিরে যান।

অন্যদিকে, মিচেল স্টার্কের ফেরা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে আইপিএল কর্তৃপক্ষ দলগুলোকে নতুন করে খেলোয়াড় বদলের সুযোগ দিয়েছে।

মোস্তাফিজকে ছয় কোটি রুপিতে দলে নেওয়া হলেও, আইপিএলের ধারা ৬.৬ অনুযায়ী, মৌসুমের যতগুলো ম্যাচ ইতোমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই অনুপাতে তার পারিশ্রমিকের অর্থ কেটে রাখা হবে। অর্থাৎ, যদি মুস্তাফিজ দিল্লির শেষ তিনটি ম্যাচেই স্কোয়াডে থাকেন, তাহলে ১৪ ম্যাচের পুরো মৌসুমের অনুপাতে তিনি মাত্র ৩ ম্যাচের পারিশ্রমিক পাবেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে মাঠে নামলে ম্যাচ ফি অবশ্য এর সাথে আলাদাভাবে যুক্ত হবে।

এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার, দিল্লি ক্যাপিটালস চাইলে এই বদলি ব্যবস্থার মাধ্যমে মুস্তাফিজকে পরের মৌসুমে দলে ধরে রাখতে পারবে না। এই নিয়মটি শুধুমাত্র চলতি মৌসুমের জন্যই প্রযোজ্য। ফলে তাকে পরবর্তী আইপিএলের জন্য আবারও নিলামে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সুতরাং, মুস্তাফিজের ‘ছয় কোটির চুক্তি’ শুনে যতটা মনে হচ্ছে, বাস্তবে তিনি ততটা অর্থ পাচ্ছেন না। নিয়ম অনুযায়ী, তিনি বাকি ম্যাচগুলোর অনুপাতে পারিশ্রমিক পাবেন।  তবুও, নতুন করে আইপিএলে ডাক পাওয়া বাংলাদেশের এই পেসারের জন্য একটি বড় সুযোগ। এখন দেখার অপেক্ষা, তিনি দিল্লির হয়ে মাঠে কতটা সুযোগ পান এবং কেমন পারফর্ম করেন।