সময়ের জনমাধ্যম

রাবিতে নিজ বিভাগের সংবর্ধনায় সিক্ত হলেন অধ্যাপক প্রদীপ পাণ্ডে

বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডেকে সংবর্ধনা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ১২৩ নম্বর কক্ষে তাঁকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতেই অধ্যাপক প্রদীপ কুমারকে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর বিভাগের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মশিহুর রহমান, অধ্যাপক তানভীর আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ বকুল, অধ্যাপক ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাজিয়াত হোসেন চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও আব্দুল্লাহীল বাকি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের কাছে সংবর্ধনার প্রতিক্রিয়ায় ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘একজন শিক্ষক বেঁচে থাকেন শিক্ষার্থীর জন্য। যাদের জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম তাদের থেকে দূরে যাওয়া অনেক কঠিন। আমার বাবা-মা আমাকে জন্ম দিয়েছে আর বিভাগ আমাকে কর্ম এবং পরিচিতি দিয়েছে। এই বিভাগ আমার দ্বিতীয় মা। আর আমার এ পর্যন্ত আসার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই বিভাগ। আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের কিছু বিশেষ গুণ রয়েছে যেটা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের শিক্ষকরা ঈর্ষা করেন। আমি এই বিভাগের সব কিছুকে অনেক বেশি অনুভব করবো। বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা শেষ করার মতো নয়।’

পিএসসিতে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করার চেষ্টা করবেন। এজন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন অধ্যাপক পাণ্ডে।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মশিহুর রহমান বলেন, ড. প্রদীপ পাণ্ডে কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, তাঁর কাজ দিয়ে সারাদেশেই সুনাম অর্জন করেছেন। পিএসসিতে কার্যকরী ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করার মধ্য দিয়ে ড. পাণ্ডে নিজেকে আরো বেশি আলোকিত করবেন বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।

সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, আমরা অসংখ্য জায়গায় প্রদীপ স্যারের অভাব বোধ করবো। একজন মানুষ হিসেবে কারো অভাব বোধ করার চেয়ে বড় পাওয়া হতে পারে না। এটা শুধু শিক্ষার্থীরা নয় বরং শিক্ষকসহ সবাই এই অভাব বোধ করবেন।

সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহীল বাকি বলেন, ড, পাণ্ডের মতো মানুষ পাশ থেকে চলে গেলে ফাঁকা লাগবে। যে কোনো প্রয়োজনে স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতো। স্যারকে যেভাবে সবকিছু বলা যেতো অন্যদের সেভাবে বলা যেত না। স্যার সুস্থ থাকলে অবশ্যই তিনি সফল হবেন। এত অল্প বয়সে এমন জায়গায় বসবেন এটা আমাদের গর্বের বিষয়। স্যারের আলোর পথের যাত্রা শুরু হয়েছে, আমাদের আরো আলোকিত করবেন।

সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ বলেন, ক্লাস শেষেই হলে যেতেন পড়াশোনার জন্য। আমি বিভাগের সকল সমস্যার সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে ড. পাণ্ডেকে ভাবতাম। উনি যে জায়গায় গিয়েছেন সেখানও বিভাগের মতো আলোকিত করবেন এই প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাতিল সিরাজের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. সাজ্জাদ বকুল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানভীর আহমেদ, স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিফা রাফিয়া । অনুষ্ঠানে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি একই বিভাগে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। তিনি ইংল্যান্ডের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।