সময়ের জনমাধ্যম

ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী, প্রত্যাশা করলেন সুষ্ঠু নির্বাচনের

আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনগণ যাকে খুশি ভোট দিক, কিন্তু নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু হয়- এটাই আমরা চাই। আমরা জনগণের সব রকম সহযোগিতা চাই।’

রোববার (৭ জানুয়ারি) সকালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিককে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছান। সেখানে এসময় ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ তাদের স্বাগত জানান।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামনে আরও কাজ আছে, এগুলো সম্পন্ন করতে চাই। আমরা আশা করি, নৌকা মার্কার জয়লাভ হবে। আমরা যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি আবারও আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে তা বাস্তবায়ন করতে পারবো। এ বিশ্বাস আমাদের আছে। জনগণের ওপর আমার বিশ্বাস আছে।’

সবাইকে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আবারও বলবো সবাই সুষ্ঠুভাবে ভোট কেন্দ্রে আসবেন। আপনার ভোটটা অত্যন্ত মূল্যবান। আমরা ভোটের অধিকারের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছি। অনেক জেল-জুলুম, অত্যাচার, বোমা, গ্রেনেড অনেক কিছু আমাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। আজকে জনগণ সেই ভোটের অধিকার পেয়েছে। সেটা তারা সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারবে এবং নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’

বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা কখনও নির্বাচনে বিশ্বাসই করে না। বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছে একটা মিলিটারি ডিকটেটরের হাত ধরে, সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে। কাজেই ভোটে কারচুপি, ভোটে সিল মারা, মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়া; এটাই তাদের চরিত্র। এখন সেই সুযোগটা তারা পাচ্ছে না। তাছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ কখনও কোনও অভিযোগ করেনি। ওই নির্বাচনে বিএনপি ৩০০ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছিল ২৩০টি সিট। এরপর থেকেই বিএনপি নির্বাচন বর্জন করছে। কারণ, ওদের জন্মলগ্ন থেকেই ভোট কারচুপি করা, সিলমারা, হ্যাঁ না ভোট, ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা- এটা তাদের চরিত্র। তারা এসব আর করতে পারবে না বলেই নির্বাচনে আসে না। তারা সন্ত্রাস করে, মানুষ হত্যা করে। মানুষ পুড়িয়ে, ট্রেনে আগুন দিয়ে, ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে তারা মনে করে ওটাই তাদের রাজনীতি। আর এটা করার কারণেই দেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এটাই হলো বাস্তব কথা।’

বিরোধীপক্ষের বয়কটের জন্য নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, বিদেশি গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই ক্রেডিবিলিটিটা কার জন্য? একটা টেরোরিস্ট পার্টির জন্য? একটি টেরোরিস্ট অরগানাইজেশনের জন্য? নো। আমার জবাবদিহি দেশের জনগণের জন্য। মানুষ এই নির্বাচন গ্রহণ করলো কি করলো না- এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই তাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে আমি কেয়ার করি না। টেরোরিস্ট পার্টি কী বললো না বললো…।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম। আমরা ছোট দেশ হলেও আমাদের জনসংখ্যা অনেক। কাজেই জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। দেশের মানুষের কল্যাণ আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা সেটাই করতে চাই। আমরা গণতান্ত্রিক ধারা নিশ্চিত করেছি। কারণ, গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকার কারণে দেশের এই অর্জনটা হয়েছে। আমাদের দেশে সামরিক শাসনসহ অন্য সরকারের সময়গুলো দেখলে দেখতে পাবেন তারা দেশের জন্য কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি। যখন আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই মানুষ ভোট ও ভাতের অধিকার পেয়েছে। আর এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এটা আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি। এটা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি অবশ্যই আশাবাদী, কারণ দেশের জনগণ আমার সঙ্গে রয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা জয়ী হবো।’